The freedom of Press in India

|| সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা ||

সোনার পাথর বাটি কথাটা শুনেছেন নিশ্চয়ই? কনসেপ্টটাও আয়ত্তের মধ্যে? যদি না হয়ে থাকে আমি বলছি আপনাকে। Freedom of Press বা সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা আজকের দিনে দাঁড়িয়ে সোনার পাথর বাটি বা অন্য যা যা অক্সিমোরন রয়েছে সবার সাথে ঠিক ভাবে এঁটে যায়। ৩রা মে প্রতিবছর এই সংবাদ মাধ্যমের স্বতন্ত্রতা দিবস পালনের একটা নিয়ম রয়েছে। এই দিনটি আসলে পালন করা হয় সেই সব সাংবাদিকদের কথা মনে করে যাঁরা সাংবাদিকতা করতে গিয়ে নিজের সত্তাটাকে বিকিয়ে দিতে চাননি। হয়তো আমাদের দেশেও কোথাও উদযাপন করা হয় এই দিনটি! কিন্তু আপনাদের মনে পড়ছে কি ২০১৭ এর একটি দিন? যেদিন ৫৫ বছরের এক প্রৌঢ় অবিবাহিতা মহিলা সাংবাদিককে তাঁরই বাড়ির সামনে পরপর ৩ খানা গুলি দিয়ে পাঁজর ঝাঁঝরা করে দেওয়া হয়। হ্যাঁ আমি গৌরী লঙ্কেশের কথাই বলছি। তিনি ‘গৌরী লঙ্কেশ পত্রিকা’ নামে একটি সাপ্তাহিক সংবাদ পত্র চালাতেন। সার্কুলেশন ওই মেরে কেটে হাজার ছুঁতো। তাহলে তাঁর দোষ? তিনি শাসক দলের মতবাদের বিরুদ্ধে কথা বলা শুরু করেছিলেন, সাধারণ মানুষের আশাহত হওয়ার গল্প গুলোকে তুলে ধরার চেষ্টা করতেন। হাস্যকর হল শাসকের এত ঢাক ঢাক গুড় গুড়ের পরেও International Free Press Index এর তালিকায় ২০১৯ সালে ১৪২তম জায়গাটায় কোনো রকমে ঠেলে গুঁতিয়ে ঢুকতে পেরেছে ভারত। করোনা ভাইরাসের এই সঙ্গীন অবস্থাতেও গৌতম নাভলাখাকে জেলে কাটাতে হচ্ছে এই সন্দেহে যে তিনি মাওইস্ট ষড়যন্ত্রের সাথে যুক্ত ছিলেন। একটি অনলাইন সংবাদ পত্রের এডিটর নাভলাখা বর্তমানে ৭ বছর কারাদণ্ডের মেয়াদের আওতায় রয়েছেন। Press কে মনে করা হত, 'হ্যাঁ হত' গণতন্ত্রের চতুর্থ পিলার যা আজ ধ্বংসের মুখে। বলাই বাহুল্য যদি একটি পিলার ধ্বসে যায় তাহলে পুরো ব্যবস্থাটাই মুখ থুবড়ে পড়তে বেশি দেরি নেই। শাসকের watchdog এখন তাদেরই lapdog এ পরিণত হয়ে সাধারণ মানুষের দিকেই দাঁত মুখ খিঁচিয়ে এগিয়ে আসছে। একটি স্বাধীন দেশের নাগরিক হয়েও মানুষের ইন্টারনেট ব্যবহারের সম্পূর্ণ ক্ষমতা উঁচু গদিতে বসা মানুষগুলোর হাতেই রয়েছে। বিদেশী সাংবাদিক আসা এখন তো প্রায় নিষিদ্ধই হয়ে গেছে এই দেশে। অবস্থা তুঙ্গে ওঠে যখন ২০১৯ এ কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা জারি হয়। কাশ্মীরী জার্নালিস্ট গৌহর গিলানি, পারজাদা আশিক, এবং চিত্র সাংবাদিক মাসরাত জারাকে পুলিশের রোষের মুখে পড়তে হয়। সবারই দোষ একই সবাই নাকি কাশ্মীরের ভুল চিত্র তুলে ধরছিল আর রাষ্ট্র যেটা আমাদের দেখাচ্ছে সেইটাই ঠিক। সেইটাই আমাদের মেনে নিতে হবে যেটা স্টুডিও এর ঠাণ্ডা ঘরে বসে থাকা সরকারের পা চাটা কিছু প্রাণী আমাদের জানাচ্ছে বোঝাচ্ছে। প্রসঙ্গে নীরেন্দ্রনাথের একটি কবিতার কিছু লাইন মনে পড়ে.. "সে এসে একবার এই হাততালির উর্ধে গলা তুলে জিজ্ঞাসা করুক রাজা তোর কাপড় কোথায়?" আপাতত, সেই শিশুটির অপেক্ষাতেই থাকলাম।

Comments