Julian Paul Assange

|| জুলিয়ান পল অ্যাসাঞ্জ ||


"If journalism is good, it is controversial by nature."
প্রায় মধ্য যুগ থেকেই যা নতুন, যা বাঁধভাঙা, তাকে ভয় পেয়ে এসেছে শাসক দল। চিরকালই নতুন চিন্তা-ভাবনাগুলোকে শিশিতে বন্দী করে সমুদ্রের গভীরে ফেলে দিতে চেয়েছে বিশ্বের মাথারা। কিন্তু গ্যালিলিওর মত কিছু চরিত্র আমাদের ভয় পেতে আটকায়। মেনে নিতে শেখায় যে রাষ্ট্রশক্তি চরম নয়, সেটা হতে পারে না। জুলিয়ান পল অ্যাসাঞ্জ এমনই এক মানুষ যিনি সরan Pauকারের লুপ হোল গুলোকে দিনের আলোর সামনে এনে ফেলেছিলেন।
১৯৭১ সালে অস্ট্রেলিয়ার টাউনসভিল থেকে বর্তমানের জেল জীবন! যাত্রা পথটা মোটেই সহজ ছিল না। ছোটবেলা থেকেই জুলিয়ান কম্পিউটার প্রোগ্রামিং এ দক্ষ ছিলেন এবং নিমেষে হ্যাক করতে পারতেন হাই প্রোফাইল অর্গানাইজেশনের ডেটাবেস। অস্ট্রেলিয়ায় হ্যাকিং এ প্রায় ৩০ এরও বেশি চার্জ আছে জুলিয়ানের ওপর। ২০০৬ সালে তিনি চালু করেন 'WikiLeaks' নামক একটি 'জার্নালিস্ট এজেন্সি' যা বেশ কিছু দেশের সরকারের রাতের ঘুম কেড়ে নেওয়ার জন্য যথেষ্ট। এই ওয়েবসাইটে তিনি প্রকাশ করেছে প্রায় ১০ লাখেরও বেশি আন্তর্জাতিক গোপন তথ্য। তাঁর লেখার মধ্যে উঠে এসেছে ২০০৮ এ চায়না রায়ট, কেনিয়া পুলিশের বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, পেরুর পেট্রোল গেট স্ক্যান্ডেল, ব্রিটিশ ন্যাশনাল পার্টি মেম্বারশিপ লিস্ট, বার্কলে ব্যাংক এর ট্যাক্স আ্যভয়ডেন্স সহ আরও বেশ কিছু অজানা চাঞ্চল্যকর তথ্য।
আশঙ্কা ঘনীভূত হয়, যখন তিনি প্রকাশ করেন আমেরিকান ড্রোন স্ট্রাইক, ইরাক আফগান ওয়ার লগ ইত্যাদিতে যা সেই সব দেশের সরকার খুব পরিকল্পিতভাবে লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছে। ২০১০ সালে WikiLeaks প্রকাশ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তরের (U.S. Department of Defence) একটি কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স রিপোর্ট যা যুক্তরাষ্ট্রের সিকিউরিটি প্রটোকলকে বিশেষ ভাবে নাড়িয়ে দেয়। সেই রিপোর্টে বেরিয়ে আসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিলিটারির বাগদাদ এয়ার স্ট্রাইকের ফুটেজ। এই স্ট্রাইকে মারা যান প্রায় ১২-১৮ জন মানুষ যাঁদের মধ্যে ছিলেন ২ জন সাংবাদিক এবং ২ জন শিশু। আর এই হত্যাকাণ্ডের নাম দেওয়া হয় "Collateral Murder"। এই পুরো ঘটনায় তাঁকে সাহায্য করে গেছে ২২ বছর বয়সী মার্কিন সেনা গোয়েন্দা বিশ্লেষক (US Army Intelligence Analyst) চেলসা ম্যানিং। বাগদাদ এয়ার স্ট্রাইকের ভিডিও প্রকাশের অপরাধে ম্যানিংকে ৩৭ বছরের জেল হেফাজতের রায় দিয়েছে সরকার। ২০১৬ সালে হিলারি ক্লিন্টন এর ব্যক্তিগত সার্ভার থেকে প্রায় ১২০০ মেইল প্রকাশ করে WikiLeaks আর অ্যাসাঞ্জ আবার খবরের শিরোনামে উঠে আসেন।
জুলিয়ানকে বহুবার তাঁর কাজের জন্য জেলে যেতে হয়েছে, তবু এই অসম সাহসী সাংবাদিক ও তুখোড় বুদ্ধিমান কম্পিউটার প্রোগ্রামার দমে যাননি। মানুষের কাছে সত্যিটাই তুলে ধরতে চেয়েছেন বারবার। UK বা US এর বহু দেশ থেকে গ্রেফতার ও বিতাড়িত হয়েছেন তিনি। একটি বোহেমিয়ান জীবন, পামেলা আণ্ডারসনের সাথে বিতর্কিত সম্পর্ক এবং প্রায় ডজনখানেক আন্তর্জাতিক অভিযোগের পরেও তিনি বলেছেন,
"It is the role of good journalism to take on powerful abusers, and when powerful abusers are taken on, there's always a bad reaction. So we see that controversy, and we believe that it is a good thing to engage in."
ফেসবুক:
https://www.facebook.com/parallel.void/

Comments