Kargil War 1999: Bijay Diwas

|| কার্গিল বিজয় দিবস ||
Image may contain: 1 person, text that says "বিজয় দিবস মাথায় আলোচনা কার্গিল বিজয় দিবস বিজয় দিবস রয়েছে, একটি কার্গিলের বিজয় দিবসআ একটি ১৯৭১ এরইন্দো- পাকযুদ্ধজয়ের সময় বাংলাদেশ পাকিস্তান থেকে রাষ্ট্রে পরিতহয় বিজয় দিবস বলতেই আমাদের ম্যাক্রো আর্মিদের দেশাত্মবোধক দোকানের আড্ডায় নিয়ে আমাদের উত্তরদিকের দেশটিকে কীভাবে শায়েস্তা রক্তগরম করাফন্দিফিকির কোথাও হারিয়ে ইতিহাস, কিছু মানুষের, পরিশ্রম। ভুলেযায় দিনগুলির সেভাবেই আমদের কার্গিল আটকে পড়েছে তারকাদের যুদ্ধের অভিনয়ের আমাদের অনেকের সময়কাল, অনেকেরই থাকলেও বোঝার তৈরিহয়ে ওঠেনি। কার্গিলবিজয়ি প্যাতালাল parallel.void শজলাই ১৯৯৯"
ভারতে আসলে দুটি বিজয় দিবস রয়েছে, একটি কার্গিলের বিজয় দিবস আর একটি ১৯৭১-এর ইন্দো-পাক যুদ্ধজয়ের বিজয় দিবস, যে সময় বাংলাদেশ পাকিস্তান থেকে আলাদা হয়ে ভিন্ন রাষ্ট্রে পরিণত হয়। বিজয় দিবস বলতেই আমাদের মাথায় প্রথমে আসে সনি ম্যাক্সে আর্মিদের সিনেমা, দেশাত্মবোধক গান, চায়ের দোকানের আড্ডায় দেশ নিয়ে কিছু গভীর আলোচনা আর আমাদের উত্তরদিকের মাথার দেশটিকে ঠিক কীভাবে শায়েস্তা করা যাবে তার সব রক্ত গরম করা ফন্দিফিকির। এই সব উদযাপনের মধ্যে কোথাও হারিয়ে যায় ইতিহাস, কিছু মানুষের, রক্ত, ঘাম, পরিশ্রম। মানুষ ভুলে যায় কুৎসিত দিনগুলির ছবি। সেভাবেই আমদের কাছে কার্গিল যুদ্ধ আটকে পড়েছে বলিউডি তারকাদের যুদ্ধের অভিনয়ের মধ্যেই। আমাদের মধ্যে অনেকের হয়তো মনেও নেই এই যুদ্ধের সময়কাল, মনে থাকলেও এই যুদ্ধ আসলে কী সেটা বোঝার মত ক্ষমতা অনেকেরই তখনও তৈরি হয়ে ওঠেনি।
কার্গিলের যুদ্ধ শুরু হয়েছিল ১৯৯৯ সালের মে মাসে, শেষ হয় জুলাইতে। তিন মাসের এই যুদ্ধে প্রাণ হারান প্রায় ৫৭০ জন ভারতীয় সেনা, আহতের সংখ্যা ১৩০০ ছাড়িয়ে যায়। যুদ্ধের শুরুতে পাকিস্তান দায় ঝেড়ে ঘোষণা করে, যুদ্ধ আসলে কাশ্মীরী মিলিট্যান্ট আর ভারতীয় সেনার মধ্যে। কিন্তু পরে তথ্য উঠে আসে যে পাকিস্তানি প্যারামিলিটারি ফোর্সের সক্রিয় ভূমিকা ছিল এতে। কার্গিলের যুদ্ধের আর একটি বিশেষ আর ভয়াবহ দিক হল, এটি পৃথিবীর প্রথম দুটি পরমাণু শক্তিধর দেশের মধ্যের লড়াই। ভারত ১৯৭৪ সালে দেশের প্রথম পোখরানে পরমাণবিক গবেষণায় সফল হয় অন্যদিকে ১৯৯৮ সালে পাকিস্তানও নিজেকে পারমাণবিক শক্তিধর দেশ হিসেবে ঘোষণা করে ফেলে। দুটি নিউক্লিয়ার শক্তিধর দেশের মধ্যেকার এই যুদ্ধ কী ভয়ানক হতে পারত তা আজ আর বলার অবকাশ রাখে না।
১৯৯৮ সালের শেষ দিক থেকেই দেশের ইন্দো-পাক সীমান্তে পাকিস্তানি সশস্ত্র সৈন্যের আনাগোনা লক্ষ্য করা যাচ্ছিল। ৩রা মার্চ যুদ্ধ শুরু হয় শ্রীনগর থেকে প্রায় ২০৫ কিমি দূরে অবস্থিত কার্গিল শহরে এবং ধীরে ধীরে তা ছড়িয়ে পড়ে পার্শ্ববর্তী শহর দ্রাস, কাক্সার, মুষ্ক প্রভৃতি অঞ্চলে। ভারতীয় সেনাবাহিনী ও বিমানবাহিনীর যৌথ প্রচেষ্টার পরেও ভারতের ১টি মিগ-২১ ও একটি মিগ-২৭ প্লেন এবং একটি চপারকে ধ্বংস করে পাকিস্তানি মিলিটারি। মৃত্যু হয় ল্যাফটেন্যান্ট নচিকেতা ও চার জন ভারতীয় বায়ু সেনার। ভারতের দিক থেকে আক্রমণ আরো কঠিনতর হয়। দেশের সেনারা একে একে পুনঃঅধিগ্রহণ করতে থাকে বাটালিক অঞ্চল, দ্রাসের তোলোলিং পাহাড় ও তার আশে পাশের জায়গাগুলি। ১৫ই জুন একটি টেলিফোনিক বৈঠকে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিন্টন নওয়াজ শরীফকে কার্গিল থেকে সৈন্য সরিয়ে নিতে বলেন। কেটে দেওয়া হয় পাকিস্তানি সৈন্যের খাদ্য ও অস্ত্রের সাপ্লাই লাইন। এরপর ভারতীয় সেনা একের পর এক আঘাত হানতে থাকে। ৪ঠা জুলাই প্রায় ১১ ঘন্টা যুদ্ধের পর দেশের জওয়ানরা টাইগার হিল সহ অন্যান্য পাক অধিকৃত জায়গায় দেশের পতাকা পুনঃস্থাপন করে।
আপাতদৃষ্টিতে তাদের মুজাহিদ্দিন সেনা মনে হলেও, প্যারামিলিটারি যে আসলে পাকিস্তানেরই ছিল তা প্রমাণিত হয় পাকিস্থানি জেনারেল শাহীদ আজিজ এবং পাকিস্থানের গোয়েন্দা সংস্থা আই এস আই-এর সপ্রতিভ ঘোষণায়। অন্যদিকে পারভেজ মুশারফ জানান যুদ্ধের ব্যাপারে তিনি অবগত ছিলেন না, বরং দু দেশের মধ্যে ঘটে চলা এই ভয়ঙ্কর যুদ্ধের ব্যাপারে জানতে পারেন ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর ফোনে। এই যুদ্ধে যেসব ভারতীয় মারা গেছেন তাঁদের স্মৃতির জন্য তৈরী করা হয়েছে কার্গিল ওয়ার মেমরিয়াল। চারিদিকে টাইগার হিল ও তোলোলিং পাহাড়ে ঘেরা এই মেওরিয়াল্টিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে যুদ্ধের অনেক স্মৃতি, সেনাদের ব্যবহৃত অস্ত্র, তাঁদের পোশাক, বহু মুল্যবান ছবি। সামনের একটি দেওয়াল জুড়ে রয়েছে জওয়ানদের নাম যাঁরা নিজেদের প্রাণ দিয়ে বেঁধে রেখেছিলেন দেশের সীমান্তকে। আর তাঁদের সামনে জ্বলছে একটি বাতি যার শিখা কখনো নেভে না।

Comments