|| সাদ্দাম হোসেন ||




সাদ্দাম হোসেন এমন একটি নাম যা সাম্প্রতিক রাষ্ট্রীয় ইতিহাসে একটি বিশেষ জায়গা করে নিয়েছে। প্রায় দুই যুগ ধরে গোটা পৃথিবীর কূটনৈতিক সম্পর্কগুলোকে তিনি এমন ওলট-পালট করে দিয়েছিলেন যেখানে মধ্যপ্রাচ্যের ম্যাপটি বারংবার ক্ষতবিক্ষত হয়েছে অসংখ্য অন্তর্দ্বন্দ্বে। তাঁকে ঘিরে নানান গল্প ও মিথ কুয়াশার মতো বিছিয়ে রয়েছে আজও। তাঁর মৃত্যুর প্রায় ১৪ বছর পরেও বলা যাচ্ছে না, তাঁকে রাষ্ট্রনেতা হিসাবে ভালো এবং মন্দের সংজ্ঞায় কোন দলের উদাহরণ হিসাবে ধরা উচিত।
সাদ্দামের জন্ম ইরাকের প্রধান শহর বাগদাদ থেকে বেশ কয়েকশো কিলোমিটার দূরে অবস্থিত তিরকিত নামক একটি গ্রামে। জন্মের আগেই তাঁর বাবা মারা যান। সৎ বাবার পরিবারে তিনি বড় হতে চাননি, তাই পালিয়ে আসেন বাগদাদে এক আত্মীয়র কাছে। সেখান থেকেই বা'থ পার্টির সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ। ইরাক ছিল সেই সময়ে ব্রিটেনের ক্ষমতাধীন। কৈশোর থেকে সাদ্দামের ব্রিটিশবিরোধী মানসিকতা তাঁকে আরও রাজনীতি অভিমুখী করে তুলেছিল। সেই মুহূর্ত থেকেই ইরাকের শাসকের গদি ছিল টালমাটাল কারণ বা'থ পার্টি তৎকালীন ইরাকের প্রধানমন্ত্রী আবুল কাশেমকে হত্যার পরিকল্পনায় লেগে পড়েছে। ২০ বছর বয়সী সাদ্দাম পুরো পরিকল্পনায় অগ্রভাগে জড়িত।
এক্ষেত্রে বেশ কিছু বছর পিছিয়ে যাওয়া যেতে পারে। ১৯২০ সাল, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে ব্রিটেন ধীরে ধীরে শক্তি হারাতে থাকে তার কলোনিগুলোর উপর। সেই সময় ব্রিটেন এবং ফ্রান্স, প্রাচ্যের সিরিয়া ইরাক প্যালেস্টাইন এবং ট্রান্সজর্ডান (বর্তমানের জর্ডান) দেশগুলিতে নিজের আধিপত্য অলিখিতভাবে বজায় রেখেছিল। হাশিমায়েট বংশের ফাইজলকে ইরাকের রাজা করে বসানো হয়। ১৯৩২ সালে ইরাক ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্তি পেলেও তার তেলের খনিগুলির মায়া ব্রিটেনের তখনও অব্দি ছাড়তে পারেনি। ১৯৫৮ সালে একটি সেনা বিদ্রোহের পর ইরাক পুরোপুরিভাবে স্বাধীনতা লাভ করে। তার ঠিক ১০ বছর পরেই উত্থান ঘটে বা'থ পার্টির যা পরবর্তী বেশ কিছু বছর ইরাকের ইতিহাসকে নিয়ন্ত্রণ করেছে।
এক্ষেত্রে বলে রাখা ভালো, মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশগুলির মধ্যে ধর্মীয় বিভাগের ইতিহাস খুবই পুরনো। মুসলমানদের ২টি শ্রেণী শিয়া-সুন্নি এবং আরও বেশকিছু ধর্মীয় জাতির মধ্যে উত্তপ্ত সম্পর্কের আবহাওয়া কোনোকালেই বন্ধুত্বপূর্ণ ছিল না। ইরাকে শিয়া অন্তর্ভুক্ত ব্যক্তি বেশি থাকলেও সাদ্দাম ছিল প্রকৃতপক্ষে সুন্নি শ্রেণীর মুসলমান। স্বাভাবিকভাবেই তিনি সুন্নিদের পক্ষপাতিত্ব করা শুরু করেন। অন্যদিকে ইরাকের উত্তরাংশে আরেকটি দলের প্রভাব বেশি ছিল সেটা হল কুর্দ। তাদের দখল করে রাখা জায়গাটি কুর্দিস্তান নামেও পরিচিত। ১৯৯১ সাল থেকে কুর্দিস্তান স্বরাষ্ট্র ব্যবস্থা বজায় রেখেছে যেখানে তাদের নিজেদের সরকার, পার্লামেন্ট এমনকি সৈন্যবাহিনীও রয়েছে 'যা পেশ মার গা' নামে অভিহিত রয়েছে।
ফিরে আসা যাক পুরোনো গল্পে। বা'থ পার্টি আবুল কাশেমের হত্যাকাণ্ডে অসফল হলে সাদ্দাম রাতারাতি পালিয়ে যায় ইজিপ্টে সেখানে গিয়ে তিনি তাঁর আইনবিদ্যার পাঠ শেষ করেন। ঠিক ৪ বছর পর ১৯৬৩ সালে বা'থ পার্টি কাসেমকে উৎখাত করলে সাদ্দাম ফিরে আসেন এবং নতুন করে শুরু হয় তাঁর যাত্রা। এইবারে তাঁর আগমন ছিল অনেক বেশি দৃঢ়। ১৯৬৮ সালে সাদ্দাম পুরোপুরিভাবে রাজনীতিতে যোগদান করেন। সেই সময়ে রাষ্ট্রপতি হন হাসান আল বাক্কার এবং উপরাষ্ট্রপতির গদি দখল করে নেন সাদ্দাম হোসেন। পরবর্তী প্রায় ১০ বছর বাক্কার আর সাদ্দামের যুগলবন্দী ইরাককে বেশ উন্নতির পথে নিয়ে যায়। শিক্ষা বিদ্যুৎ এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সুবিধাগুলি সরকার থেকে পেতে থাকে সাধারণ মানুষ, যা এতদিন ধরে বিদেশি ঔপনিবেশিকদের চাপে পড়ে ইরাকের সাধারণ মানুষ কোনোদিন পায়নি। সেই সময়ে সাদ্দাম প্রাতিষ্ঠানিকভাবে উপরাষ্ট্রপতির ভূমিকায় থাকলেও রাষ্ট্রের সব সিদ্ধান্তের মূলে তিনিই ছিলেন। ১২ বছর পরে সাদ্দাম অসুস্থ বাক্কারকে সরিয়ে নিজে রাষ্ট্রপতি পদের জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হন। ইরাকে শুরু হয় একটি নতুন যুগ। ক্ষমতায় আসার সাথে সাথেই সাদ্দাম 'পর্জ' নীতি গ্রহণ করেন অর্থাৎ তিনি নিজের সৈনিকদেরই মৃত্যুদণ্ড দেওয়া শুরু করলেন। কোন উচ্চপদস্থ রাষ্ট্রীয় কর্মচারীর থেকে যদি সামান্যতম বিদ্বেষী মনোভাবের গন্ধ পেতেন তাহলে নিমেষে তিনি তাঁর মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার ব্যবস্থা করতেন। ইরাকের উচ্চপদস্থ ব্যক্তি এবং সৈনিকদের মধ্যে ভয়ের উদ্রেক ঘটতে থাকে এই ভেবে যে, যেকোনো মুহূর্তে তারা হয়তো সাদ্দামের সন্দেহের রোষে পড়তে পারেন।
সাদ্দাম আসার পর থেকে বিরোধী ধর্মীয় সংগঠন শিয়া এবং রাজনৈতিক সংগঠন কুর্দ, তাঁকে গদিচ্যুত করার পরিকল্পনা করতে থাকে। এই লক্ষ্যে সময়ে সময়ে প্রচুর বিপ্লব এবং বিপ্লবীদের আবির্ভাব ঘটতে থাকে। যার ফলস্বরুপ সাদ্দাম পাল্টা আঘাত হানেন কুর্দিস্তানের ১৯৮৮ সালের গণহত্যার মাধ্যমে। এই সময়ে ইরান তীব্র গণ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শাহ এর শাসন নীতির প্রতিবাদে ১৯৭৮-৭৯ সালে ছাত্র দ্বারা পরিচালিত একটি আন্দোলনে ইরানের রাজতন্ত্র ভেঙে পড়ে এবং শাসক হিসাবে উঠে আসেন আয়াতুল্লাহ খোমেনী। খোমেনীর প্রধান উদ্দেশ্য ছিল ইরানসহ তার আশেপাশের দেশগুলিতে যেন পূর্ণরূপে শিয়া ধর্মীয় শাসনব্যবস্থা গড়ে ওঠে। ইরাক ছিল শিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ। সাদ্দাম সতর্ক হয়ে যান যে যদি ইরাকি শিয়ারা সাদ্দামের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে লিপ্ত হন তাহলে তাঁর গদি টালমাটাল হওয়া সম্ভব। তাই ১৯৮০-৮২ সালের মধ্যে ইরাক এবং ইরানের একটি যুদ্ধ ঘটে যায় যেখানে আক্রমণকারী অবশ্যই ইরাক। ইরাকের হয়ে গোপনে পক্ষপাতিত্ব করে ২টি অতিকায় রাষ্ট্রশক্তি- আমেরিকা ও সোভিয়েত। যুদ্ধে ৩ রাষ্ট্রের মুখে পড়ে ইরান একেবারে কোণঠাসা হয়ে যায়। ইরাক এবং ইরানের এই যুদ্ধের সাথে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের বেশকিছু বৈশিষ্ট্যগত মিল দেখতে পাওয়া যায়। যুদ্ধের শেষের দিকে সাদ্দাম কুর্দিস্তানের সাথে তাঁর পুরোনো শত্রুতার প্রতিশোধে রাসায়নিক এবং জৈব অস্ত্রের ব্যবহার করেন। সাইরিন এবং মাস্টার্ড গ্যাসে ঠাসা একের পর এক বোমা পড়তে থাকে আকাশ থেকে ইরানের মাটিতে। কুর্দিস্তানে অবস্থিত প্রায় ৩০ লক্ষ জনসংখ্যার মধ্যে মৃত্যু হয় ১.৮ লক্ষ মানুষের। যুদ্ধটি একটি স্টেলমেটে পরিণত হয় অর্থাৎ কোনো দেশেরই লক্ষ্য পূরণ হয় না অথচ মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়ে অগণিত সৈনিক এবং সাধারণ মানুষ।
পরবর্তী ঘটনা হল গালফ ওয়ার। সোভিয়েতের পতন নিশ্চিত হয়ে গেলে অবসান হয় ঠাণ্ডা যুদ্ধের, যুদ্ধবাজ আমেরিকা খুঁজতে বেরোয় নতুন শত্রু। সেই শত্রু খুঁজে পায় মধ্যপ্রাচ্যে- আরব দুনিয়ায়। ফলে বিশ্বরাজনীতির প্রেক্ষাপটে এল বড়সড় বদল। ঘটনার অগ্রভাগে আবারও নাম উঠে আসে সাদ্দাম হোসেনের। ১৯৯০-৯১ সালের এই যুদ্ধে গোটা পৃথিবীর অর্থনীতি এবং তেল সাম্রাজ্য নড়ে চড়ে বসে। তেলের খনি নিয়ে কুয়েত এবং ইরাকের মধ্যে শুরু হয় অর্থনীতির লড়াই। এই আন্তর্জাতিক অস্থিরতার মধ্যেও সাদ্দাম মনে করেন কুয়েতকে নিজ অধিগ্রহণের আওতায় আনলে, সেখানকার তেলের খনিগুলি থেকে লাভ করতে পারবেন। এই লক্ষ্যে অগাস্ট মাসে তিনি কুয়েত আক্রমণ করেন এবং দুই দিনের মধ্যেই তিনি গোটা দেশ দখল করে নেন। এই ঘটনায় সৌদি আরব কিছুটা ঘাবড়ে যায়। ছুটে যায় বন্ধুরাষ্ট্র আমেরিকার কাছে। অন্যদিকে আঙ্কেল স্যাম অর্থাৎ আমেরিকা ৩৫টি দেশ নিয়ে একটি জোট তৈরি করে যারা সকলেই এককালের বন্ধুরাষ্ট্র ইরাকের বিরুদ্ধে লড়ার জন্য প্রস্তুতি নেয়। এই জোটের আক্রমণ পুরোটাই ছিল রাষ্ট্রপুঞ্জের মদতপুষ্ট। আমেরিকার লাগাতার হামলায় প্রায় ১০০ ঘণ্টার মধ্যেই ইরাক পর্যুদস্ত হয়ে পড়ে এবং ২৮শে ফেব্রুয়ারি যুদ্ধ স্থগিত হয়। এই অবস্থায় ইরাকি সৈন্য ধীরে ধীরে কুয়েত থেকে পিছু হটতে থাকে কিন্তু কুয়েতের মাটিতে তাদের পদচিহ্ন রেখে যেতে ভোলে না। ফেরার পথে প্রায় ৮০০ তেলের খনি জ্বালিয়ে দেয় ইরাকি সৈন্যরা যার ভয়াবহতার ছবি, স্যাটেলাইট ক্যামেরাতে সুস্পষ্টভাবে ধরা পড়েছে। এই বিশেষ যুদ্ধ শেষের আক্রমণের পন্থাটি 'স্কর্চড আর্থ' নামে পরিচিত।
যুদ্ধশেষে আমেরিকা একটি নতুন ফন্দী আঁটে। কুর্দ ও শিয়া গোষ্ঠীকে ইরাকের পেছনে লেলিয়ে দেওয়া হয়। আমেরিকার উদ্দেশ্য ছিল যাতে এই দুই গোষ্ঠীর মিলিত সংগ্রামে সাদ্দাম গদিচ্যুত হয়ে যায়। কিন্তু দুই গোষ্ঠীকেই সাদ্দামের সৈন্যদল দুমড়ে-মুচড়ে রেখে দেয়। গালফের যুদ্ধে আমেরিকা উল্লেখযোগ্যভাবে জয়ী হয়। ৩৫টি দেশের জোট মিলিয়ে ২০০ জন সৈন্যের মৃত্যু হয়, অন্যদিকে ইরাক হারায় তার ৩০ হাজার সৈন্যকে। বলাবাহুল্য এই যুদ্ধের পরই ইরাকের শাসনব্যবস্থা এবং অর্থনৈতিক অবস্থা মুখ থুবড়ে পড়ে।
তৃতীয় দফায় শুরু হয় 'অপারেশন ইরাকি ফ্রিডম'। গালফ যুদ্ধের শেষের দিকে সাদ্দাম হোসেন চুক্তিবদ্ধ হন যে তিনি কোন রকম পারমাণবিক, রাসায়নিক এবং জৈবিক যুদ্ধাস্ত্র তৈরি করতে পারবেন না। ৯/১১ ঘটনার পরে আমেরিকা সাদ্দাম হোসেনকে পুরোপুরিভাবে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য উঠেপড়ে লাগে। তৎকালীন ইউএসএ রাষ্ট্রপতি জর্জ ডব্লিউ বুশ দুটি দেশকে শত্রুপক্ষের বলয় হিসেবে ঘোষণা করেন। যার মধ্যে একটি হল ইরাক এবং অন্যটি উত্তর কোরিয়া। সাদ্দামসহ ইরাকের অভিযোগ তোলা হয় যে ইরাক এখনও ডব্লিউ এম ডি (উইপন্স অফ মাস ডেস্ট্রাকশন) তৈরি করে চলেছে। ততদিনে রাষ্ট্রসংঘও 'উইপন্স অফ মাস ডেস্ট্রাকশন' তৈরিতে বেশকিছু নিষেধাজ্ঞা ও নিয়ম-নীতি লাগু করে ফেলেছে।
২০০৩ সালের মার্চ মাস থেকে আমেরিকা ইরাকে আক্রমণ হানে। এইবারে তার সাথী দেশ ইউ এস, ইউকে, অস্ট্রেলিয়া এবং পোল্যাণ্ড। কুয়েত থেকে রওনা হয়ে আমেরিকান সৈন্যরা মাত্র ৩ সপ্তাহের মধ্যেই ইরাকের বড় শহরগুলি নিজেদের দখলে নিয়ে চলে আসে। সাদ্দাম সবার অলক্ষ্যে পালিয়ে যান নিজের জন্মস্থান তিরকিতে এবং সেই বছরেরই ১৩ই ডিসেম্বর সাদ্দামকে গ্রেপ্তার করে আমেরিকান সৈন্যরা। প্রায় ৩ বছরের মাথায় ২০০৬ সালের ৫ই নভেম্বর সাদ্দামের মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করা হয় এবং সেবছরেরই ৩০শে ডিসেম্বর তাঁর ফাঁসি কার্যকর হয়। গোটা পৃথিবী শিউরে ওঠে যখন সাদ্দামের মৃত্যুর দৃশ্যকে ক্যামেরাবন্দী করে দেখানো হয় গোটা দেশে। সাদ্দাম চেয়েছিলেন মৃত্যুদণ্ড হিসেবে তাঁকে যেন গুলি করে মারা হয়। কিন্তু ইরাকি সরকার তার কোনো গুরুত্ব না দিয়ে গোটা পৃথিবীর মানব অধিকারকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে সম্প্রচার করতে থাকে সাদ্দামের মৃত্যুর সময় তোলা একটি মোবাইল ফুটেজ। মৃত্যুর ২ দিন পূর্বে সাদ্দাম দেশবাসীর উদ্দেশ্যে একটি চিঠি লিখে জানান ইরাকের মানুষ যেন বলপূর্বক ইরাকে প্রবেশকারী দেশগুলিকে যেন ক্ষমা না করে।
শেষ অব্দি ২০১১ সালের ডিসেম্বর মাসে বারাক ওবামা ৮ বছর পরে আমেরিকান সৈন্যদের মধ্যপ্রাচ্যের মাটি থেকে সরিয়ে নিয়ে আসেন। কিন্তু ইতিমধ্যে সাদ্দামের অনুপস্থিতিতে ধর্মীয় মৌলবাদ বিশেষত আইসিস যেভাবে মাথাচাড়া দিয়েছে ইরাকের মাটিতে, তা অনেকের মনে প্রশ্ন তৈরী করেছে যে আমেরিকার সেদিনের পদক্ষেপ আদৌ ঠিক ছিল কিনা।
সাদ্দামের মৃত্যুতে ইরাকে একটি মিশ্র পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। শিয়া শ্রেণীর মানুষ সাদ্দাম হোসেনের মৃত্যু ঘোষণার পরেই ঈদ উৎসব পালন করে অন্যদিকে তাঁর সমর্থকরা বিদ্রোহের বাতাবরণ সৃষ্টি করে। যে জৈবরাসায়নিক যুদ্ধাস্ত্র মজুত রাখার অজুহাত দেখিয়ে ইরাকের মাটিতে সৈন্য প্রবেশ করল এবং সাদ্দাম গ্রেফতার হলেন তার কোনো চিহ্ন পাওয়া গেল না, প্রমাণও মিলল না। কিন্তু সাদ্দামের মৃত্যুদণ্ড হল এবং তা হল কোন সংঘটিত বিচার ব্যবস্থা ছাড়াই। এর ফলে পৃথিবীর সাধারণ মানুষের মধ্যে একটি সূক্ষ্ম চিন্তার বুনন সৃষ্টি হয়, "স্বৈরাচারীত্ব কি আদৌ পৃথিবীর বুক থেকে পুরোপুরিভাবে মুছে ফেলা সম্ভব?"
ডিজাইন - 
Rafi

Comments